মে ২, ২০২৪ ৫:৩১ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

‘নেতানিয়াহু তুমি চলে যাও, ইসরায়েলে ফিরো না’

১ min read

ইসরায়েলের দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিক্ষোভকারীরা এক ধরনের অনড় অবস্থান নিয়েছেন। তাদের সরিয়ে দিতে দেশটির স্বঘোষিত রাজধানী জেরুজালেমের রাস্তায় পুলিশকে জল কামান, গুলি ও স্প্রে করতে দেখা গেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সরকার বিরোধী বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিচ্ছিলো। গাজায় বন্দি ১৩৪ জন ইসরায়েলিকে মুক্ত করতে চুক্তির করার জন্যও তারা দেশটির সরকারের কাছে আহ্বান জানান। যদিও ধারণা করা হচ্ছে হামাসের হাতে বন্দিদের অনেকেই এর মধ্যে মারা গেছেন।

এর আগে রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসরায়েলি পার্লামেন্টের চারপাশে হাজার হাজার মানুষকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন ছিলো কাতিয়া অ্যামোরজা। যার ছেলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন, এখন যে গাজায় দায়িত্ব পালন করছেন। এই বিক্ষোভের সময় তিনি হ্যান্ড মাইকে বলেন, ‘আজ সকাল আটটার পর থেকে আমি এখানে রয়েছি। আমি নেতানিয়াহুকে বলতে চাই, দেশ ছাড়ার জন্য আমি তোমাকে একটি প্রথম শ্রেণির টিকেট দিতে পারলে খুশি হবো। তুমি চলে যাও, আর এদেশে ফিরো না। এবং আমি তাকে এটিও বলছি যে, সেই সমস্ত লোকদের সাথে নিয়ে যান, যাদেরকে আপনি সরকারে বসিয়েছেন। তারা আমাদের সমাজের সবচেয়ে খারাপ মানুষ।’

বিক্ষোভকারীদের আরেকজন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডেভিড অ্যাগমন। নেতানিয়াহু যখন প্রথম নির্বাচিত হন তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন।

তিনি বলেন, এটি ১৯৪৮ সালের পরে একটি বড় সংকট। আমি ১৯৯৬ সালে যখন নেতানিয়াহুর প্রথম চিফ অফ স্টাফ ছিলাম, তখন থেকেই আমি তাকে চিনি। সেখানে তিনমাস পরে আমি চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এই নেতা ইসরায়েলের জন্য বিপদ।

তিনি আরও বলেন, বিক্ষোভকারীরা যখন রাস্তায় তখনও, নেতানিয়াহু আগাম নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি রাফায় হামাসের বিরুদ্ধে নতুন করে হামলা চালানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন। হামাসকে ধ্বংস করার ব্যাপারে ইসরায়েলিরা বিভক্ত নয়। সেই যুদ্ধের লক্ষ্যে তাদের সমর্থনও রয়েছে। তবে, যেভাবে যুদ্ধ পরিচালনা হচ্ছে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ব্যর্থতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বেশ চাপে ফেলেছে।

উল্লেখ্য, ৪০ বছর আগে ইসরায়েলি রাজনীতিতে নেতানিয়াহু খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন না। জাতিসংঘে ইসরায়েলের একজন বাকপটু মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে অসলো শান্তি প্রক্রিয়ার বিরোধিতাকারী প্ল্যাটফর্মে একটি ছোট বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

অসলো চুক্তি আনুযায়ী, ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনুমতি প্রদান করা হবে। ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরব এবং ইহুদিদের মধ্যে দীর্ঘ বিরোধ নিরসনের একমাত্র আশা ছিলো এই চুক্তি। তবে তা ব্যর্থ হয়।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বরাবরই বিরোধী ছিলেন মি. নেতানিয়াহু। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের পুনর্নির্মাণের জন্য একটি ‘বড় দর কষাকষির’অংশ হিসাবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে সমর্থনের জন্য মার্কিন কৌশলকে অবজ্ঞার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এখন তার সমালোচকরা বলেছেন যে, যুদ্ধের পরে গাজায় শাসনের জন্য রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের পরিকল্পনার কঠোর প্রত্যাখ্যান ইসরায়েলের চরম ডানপন্থীদের অব্যাহত সমর্থন নিশ্চিত করার একটি হাতিয়ার।

সূত্র- বিবিসি

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!