এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনী

১ min read

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে সহায়তা করতে মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনী। নির্বাচনের পর ২ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। একে স্বাগত জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট এবং নির্বাচন কমিশন।

আওয়ামী লীগ বলছে, সেনা মোতায়েনে ভোটের পরিবেশ আরও ভালো হবে। বিএনপি আশা করছে- তারা যে সমান সুযোগের কথা বলছে, সেটা এবার নিশ্চিত হবে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর কবির জানান, ৩৮৯টি উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং ১৮টি উপজেলায় নৌবাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। সব মিলিয়ে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকছে ৪০৭টি উপজেলায়। এর বাইরে ৮৭টি উপজেলায় গত ১৮ ডিসেম্বর থেকেই মোতায়েন আছে আধা সামরিক বাহিনী বিজিবি।

ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কমবেশি করা যাবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিবেচনায় প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনা সদস্য সংরক্ষিত হিসেবে মোতায়েন থাকবে।

সেনাবাহিনী ও বিজিবি কাজ করছে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই তারা কাজ করবে। রিটার্নিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা চাইলে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও গণনাকক্ষেও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে তারা।

গত ১৯ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা পরিপত্রে নানা বিষয়ের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর দায়িত্বের বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয়।

‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৮’ শিরোনামের ওই আদেশে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতি জোর দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, কোস্ট গার্ড এবং ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার এর আওতায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা পরিপত্রে জানানো হয়।

সেনারা তারা মূলত জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকার সংযোগস্থলে (নোডাল পয়েন্ট) অবস্থান করবেন। এ ছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় টহল ও অন্যান্য অভিযান চালাবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করবে স্বশস্ত্র বাহিনী। প্রয়োজনে থানা বা উপজেলা পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে।

অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতেও সেনা সদস্যরা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন। পরিপত্রে বলা হয়, সেনা সদস্যদের ডাকা হলে তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেট সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন।

ভোটের আগে ও পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েনকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

আওয়ামী লীগ বলছে, আগেও বিভিন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে। এবারও হচ্ছে। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ইতিবাচক। দলের সভাপতিম-লীর সদস্য পীযূষ ভট্টাচার্য ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সেনাবাহিনী নেমেছে। পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে। আশা করি, আগামীতেও স্বাভাবিক থাকবে।’ 

ঐক্যফ্রন্টও বিবৃতি দিয়ে সেনাবাহিনীকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা করেছে, এই পদক্ষেপে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করবে। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জোটের প্রধান নেতা কামাল হোসেন বলেন, ‘আশা করছি, সশস্ত্র বাহিনী জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিংবা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে না। সশস্ত্র বাহিনীর ওপর দেশ ও দেশের ইমেজ নির্ভর করে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আলাদা বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিএনপি আশা করে, দেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য জনগণের স্বার্থের পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন। কোনোভাবেই একজন ব্যক্তি বা একটি গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করবেন না।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। তারা মাঠে থাকলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা সাহস পাবে না।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!