এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৪:২১ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

পেঁয়াজের বাজারে বড় দরপতন

১ min read

কৃষকের পেঁয়াজ বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক দরপতন শুরু হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। পেঁয়াজ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে খ্যাত ফরিদপুরেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। মঙ্গলবার শহরের হাজী শরিয়াতাল্লাহ বাজারে পাইকেরিতে ৪৮ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা পর্যায়ে ৫০ টাকায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করছে বিক্রেতারা।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, গত ১/২ সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির লোভে কৃষকেরা নতুন হালি পেঁয়াজ পরিপক্ক হওয়ার আগেই প্রচুর পেঁয়াজ উঠিয়ে ফেলেছে। আর সেই পেঁয়াজ বাজারে আসতে থাকায় সরবরাহ বেড়ে গেছে।

একারণে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। তাছাড়াও এখন হালি পেঁয়াজ উঠানোর মৌসুম চলছে যে কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। তবে পেঁয়াজের দাম এর চেয়ে বেশি কমে গেলে কৃষকের লোকসান হওয়ার আশংঙ্কা আছে। কারণ পেঁয়াজ চাষে সার, ওষুধ, সেচ, লেবারসহ বহু খরচ বেড়ে গেছে। মণপ্রতি ২ হাজারের উপরে খরচ হয়েছে কৃষকের তাই এর নিচে বিক্রি হলে তাদের লোকসান হবে।

বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় ক্রেতারা খুশি। তারা জানায়, গত ১ সপ্তাহ আগেও ৮০ টাকার বেশিতে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। গত দুদিন হলে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। পেঁয়াজের দাম এমন থাকলে ক্রেতা বিক্রেতার জন্যও ভাল হবে।

জেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলা প্রায় ৩৬ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে আশা কৃষি বিভাগের।

এদিকে, রাজবাড়ীর বাজারগুলোতেও পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে। বাজারে খুচরা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। আর আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় খুশি সাধারণ ক্রেতারা।

ক্রেতারা বলছে, রমজান মাসে পেঁয়াজ অনেক দরকারি পণ্য। এক সপ্তাহ আগেও ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি ছিল পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব‍্যবধানে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের।

খুচরা বিক্রেতারা বলছে, এখন পেঁয়াজের মৌসুম। কৃষকরা জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করছে। যে কারণে বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে কৃষকরা বেশি বেশি পেঁয়াজ উত্তোলন করায় এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে।

পেঁয়াজ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে খ্যাত পাবনায় অর্ধেকে নেমেছে পেঁয়াজের দাম। পাবনায় সুজানগর ও সাঁথিয়ার পাইকারি বাজারে পাঁচ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় অর্ধেক। ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা মণের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায়।

স্থানীয় কৃষক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসে বেশি দামে বিক্রির আশায় পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে এসেছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে আবার কৃষকেরাও নতুন পেঁয়াজ বাজারে বিক্রির জন্য তুলতে শুরু করেছেন। তাতে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এই দরপতন ঘটেছে। পাবনার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

আমদানি বন্ধ থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২৫ টাকা করে দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানায়, বাজারে প্রতিদিনই প্রচুর দেশি পেঁয়াজ উঠছে। তাই ধারাবাহিকভাবে দাম কমছে। গত সপ্তাহেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। অথচ মঙ্গলবার পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ টাকা। চাষীরা জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে সরাসরি বাজারে নিয়ে আসছেন। অন্যান্য বছর পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলেও এবার তা করছেন না বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় কয়েক মাস পরেই দেশ পেয়াঁজশূন্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।

এদিকে, কৃষি বিভাগ জেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৩৯ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলেও এখনো তা আসেনি।

প্রতিবছর রমজানে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো দিনাজপুরের হিলি। সরবরাহ বাড়ায় দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৩০ টাকা। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিন্ম আয়ের মানুষজন।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, ‘ভারত থেকে খুব শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানি শুরু হচ্ছে। সেই খবরে মোকামে পেঁয়াজের সরবরাহ আগের তুলনায় বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া যারা রমজানকে ঘিরে পেঁয়াজ মজুদ করে রেখেছিলেন তারা এখন পেঁয়াজ ছাড়তে শুরু করেছেন। এতে করে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। পূর্বে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৪ হাজার টাকার উপরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ১ হাজার ৮০০ টাকায় নেমেছে। দুদিনের ব্যবধানে মণ প্রতি ২ হাজার টাকার উপরে পেঁয়াজের দাম কমেছে। এতে করে কম দামে কিনতে পারায় কম দামেই বিক্রি করতে পারছি। সেই সাথে পেঁয়াজের বেচাকেনা কমে যাওয়ার কারণেও দামের উপর প্রভাব পড়ছে।’

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!