এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৮:১২ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

গ্রেনেড হামলার সেই ভয়াল দিন আজ

১ min read

বিভীষিকাময় ও রক্তাক্ত ২১ আগস্ট আজ। বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের এক কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী এক জনসভায় দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেদিন মানবঢাল তৈরি করে দলের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাণে রক্ষা করতে পারলেও ওই নৃশংস হামলায় নিহত হন বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই এখনও শরীরে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন আঘাতের চিহ্ন; এখনও অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করে যাচ্ছেন সেদিনের সেই নৃশংসতার। হাত-পা-চোখসহ দেহের নানা অঙ্গ হারিয়ে অনেক নেতাকর্মী কষ্টের জীবন করছেন। কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। সেদিনের দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। রক্ত-ঝড়ের প্রচণ্ডতা মলিন করে দেয় বাংলা ও বাঙালির মুখ।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ সেদিন মুহূর্তেই পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। জাতি আজ ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার দিনটি পালন করবে শোকের আবহে।

যা ঘটেছিল সেদিন

তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারাদেশে বোমা হামলা এবং গোপালগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কেন্দ্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবিরোধী এক সমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। বিকেল ৪টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের পর শোক মিছিলের কর্মসূচি ছিল। বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা বিকেল ৫টার দিকে সমাবেশে পৌঁছান। বরাবরের মতো সেদিনও তিনি বুলেটপ্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জ জিপ থেকে নেমে নিরাপত্তাকর্মীবেষ্টিত অবস্থায় ট্রাকের ওপর তৈরি মঞ্চে উঠে বক্তব্য শুরু করেন। ২০ মিনিটের বক্তৃতা শেষে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে দক্ষিণ দিক থেকে মঞ্চ লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। গ্রেনেডটি মঞ্চের পাশে রাস্তার ওপর পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। পরে একে একে আরও ১২টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মুহূর্তের মধেই পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দসহ দলীয় নিরাপত্তাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে শেখ হাসিনাকে ঘিরে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গাড়িতে করে সুধা সদনে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়িতেও গুলি চালানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও ৩টি গ্রেনেড অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতরা হলেন আইভি রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন ও ইসাহাক মিয়া।

কর্মসূচি

২১ আগস্ট দিনটিকে ২০০৪ সালের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত জনগণ ‘গ্রেনেড হামলা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। আওয়ামী লীগও দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করে থাকে। প্রতিবারের মতো এবারও দিবসটি স্মরণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী বেদিতে নিহতদের স্মরণে ফুল দেওয়া হবে। বিকাল ৪টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!