মে ৫, ২০২৪ ২:০৭ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

ব্যাংকখাতের বিপর্যয় ঠেকানোর নির্দেশ

১ min read

অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপ, ঋণ কেলেঙ্কারি, লাগামহীন ঋণখেলাপি, মূলধন সংকটসহ নানা সমস্যায় সংকটে পড়েছে ব্যাংক খাত। এ সংকটের চাপ সামলাতে অধিকাংশ ব্যাংক ধারদেনা করে চলছে। পাশাপাাশি ব্যাংকে সুশাসনের অভাব দেখা দেয়ায় ব্যাংকগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে ব্যাংক খাতে দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের ব্যাংকগুলোকে কার্যকর সংশোধনমূলক পদক্ষেপ (পিসিএ) ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে।

গত অক্টোবরের শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, যা গত মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিপর্যয়ের হাত থেকে ব্যাংকিং খাতকে উদ্ধার করতে সংশোধনীয় পরিকল্পনা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংশোধনী পরিকল্পনায় ব্যাংকগুলোকে ক্যাপিটাল টু রিস্ক অ্যাসেট রেটিও (সিআরএআর), ক্যাপিটাল রেটিও (সিআর), কমন ইক্যুইয়িটি (সিইটি), নেট নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) এবং করপোরেট সুশাসনকে ভিত্তি করে ৪টি ক্যাটাগরিতে ভাগে করে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এসব সংশোধনী কার্যাবলি ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ থেকে বাস্তবায়ন করেত নির্দেশ প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের অভ্যন্তরে সব তফসিলি ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংকের কেন্দ্র থেকে শাখা পর্যন্ত প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। আর গৃহিত সংশোধনী কার্যাবলি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভার অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ব্যাংকের সংকটে উত্তরনে নতুন করে সংশোধনী কার্যাবলি আগামী ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের আলোকে প্রস্তুত করার কথা জানানো হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পূর্ব নির্ধারিত পর্ষদ সভায় পরিচালকদের অনুমোদনের জন্য উপস্থান করতে বলা হয়েছে। এই নীতিমালা ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৭৭/ক ধারা, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার এবং তফসিলি ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমওইউ-এর আলোকে করতে হবে এমন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে এখন বড় সমস্যা সুশাসনের অভাব। সুশাসনের ঘাটতি মেটাতে পারলে অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। জাল-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকার, গ্রাহক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মাধ্যমে একটি বার্তা দিতে হবে। আর তারল্য সংকট, ঋণের গুণগত মান, খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, পরিচালকদের বেপরোয়া ঋণ গ্রহণ এসব সমস্যা সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে কমে যেতে বাধ্য হবে।’

সূত্র জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বর্তমানে সুনির্দিষ্টভাবে মার্জার নীতিমালা নেই। দুর্বল ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাধ্যতামূলকভাবে একে অন্যের সঙ্গে একীভূত হতে পারে সেজন্য গত বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংক উদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। তবে এবার ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ বিপর্যয় ঠেকাতে সংশোধনী কার্যাবলি নিতে নির্দেশ দিয়েছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংক সংশোধনী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপ নিজেরাই বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিতভাবে জানাতে বাধ্য থাকবে। যদি কোনো ব্যাংক একই সঙ্গে চারটির ক্যাটাগারির একাধিক বিভাগের অধীনে পড়ে, তবে সেই ব্যাংক খারাপ ক্যাটাগরিটিতে রয়েছে বলে বিবেচনা করা হবে। পিসিএ শুরু করার পরে সংশোধনমূলক নির্দেশক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা নামে জারি করা হবে।

ব্যাংকের অবনতিশীল আর্থিক ও পরিচালন সূচক অবস্থার স্বাভাবিক উন্নতি বছরের মধ্যে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে একটি গ্যারান্টি প্রদান করতে হবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নির্ধারিত একটি বিন্যাস করার পর প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ধারার আলোকে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!