মার্চ ২৯, ২০২৪ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

‘স্বাধীনতা আর কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না’

১ min read

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ ও লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আর কখনও কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ বছর ধরে ইতিহাস বিকৃত করা হলেও তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সেটা আর সম্ভব হবে না বলেও বিশ্বাস তার। ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণের প্রেরণা নিয়ে বাঙালি যুগ যুগ ধরে এগিয়ে যাবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রচার করা হয় তখনকার রেসকোর্স ময়দানে দেয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই কালজয়ী ভাষণ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই স্বাধীনতা আর কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না। এই আদর্শ আর কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না। আজকের প্রজন্ম, তাদের কাছে বিশ্বটা অনেক উন্মুক্ত, কাজেই তাদেরও আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর এই কালজয়ী ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘হয়তো ২১ বছর করতে পেরেছিল, কিন্তু এখন আর পারবে না, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রযুক্তির এই যুগে আর এভাবে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া যাবে না। বাঙালি এগিয়ে যাচ্ছে, বাঙালি এগিয়ে যাবে। ৭ মার্চের ভাষণ যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে প্রেরণা দিয়ে যাবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে সত্যকে কেউ কখনও মুছে ফেলতে পারে না। ৭ মার্চের ভাষণেই জাতির পিতা যেটা বলে গেছেন যে, কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না… বাঙালিকে কেউ দাবায় রাখতে পারে নাই। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ আজকে ইউনেসকো কর্তৃক ইন্টারন্যাশনাল মেমোরিজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে এটি স্থান পেয়ে গেছে।’

৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে একটি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়েছিল সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার।’

এই ভাষণের ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদানের কথাটাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে।

তিনি বলেন, ‘আমার মা একটা কথাই আমার আব্বাকে ডেকে বলেছিলেন। সারাটা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছ এদেশের মানুষের জন্য, সারা বাংলাদেশে তুমি ঘুরেছ। তুমি জানো, বাংলার মানুষের জন্য কোনটা ভালো। কাজেই তোমার মনে যে কথা আসবে, তুমি সেই কথাই বলবা। কারও কথা শোনার তোমার প্রয়োজন নেই।’

৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর দেয়া নির্দেশনা দেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে মেনে অসহযোগ আন্দোলন পালন করেছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশে বহু নেতারা অনেক ভাষণ দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের ভাষণ প্রস্তুত করা। সেটাই তারা পড়েছেন। কিন্তু এই একটা ভাষণ যেটা সম্পূর্ণ উপস্থিত ভাষণ। এখানে কোনো কাগজ নেই, লেখা নেই, কিছুই নেই। একজন নেতা সারাজীবন যে সংগ্রাম করেছেন মানুষের জন্য, সেই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি এ জাতিকে কী দিতে চান, কী করছেন সেটি যেমন তিনি বলেছেন সেই সঙ্গে সঙ্গে সেই নির্যাতন অত্যাচারের কথাটা বলেছেন। এটা ঐতিহাসিক, এটা একটা বিরল ঘটনা।’

পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য যত ভাষণ দেয়া হয়েছে, তার কোনোটাই পুনরাবৃত্তি হয়নি বলেও মন্তব্য বঙ্গবন্ধুকন্যার। আর সেখানেই ৭ মার্চের ব্যতিক্রম বলে মনে করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভাষণটা আজকে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর, এই ৫০ বছর পর্যন্ত এই ভাষণটা কিন্তু বারবার আমাদের প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে। একটি মাত্র ভাষণ এটা বোধ হয় কেউ কোনো দিন হিসাব করে বের করতে পারবেন না যে এটা কত ঘণ্টা, কত মিনিট, কত দিন বাজানো হয়েছে। এটা বোধ হয় হিসাব করাটা অনেকটা কঠিন ব্যাপার।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ ভাষণ থেকে অনুপ্রেরণা পেত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যতই বাধা দেয়া হয়েছে ততই যেন এ ভাষণটা আরও উদ্ভাসিত হয়েছে। এখনো এ ভাষণ আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। এ ভাষণের প্রতিটি লাইন, প্রতিটি লাইনই যেন এক একটি কবিতার অংশ, যা মানুষের ভেতরে অন্তরে অন্য একটা অনুভূতি এনে দেয়, প্রেরণা দেয়।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ, লাখো শহীদের রক্ত বৃথা যায়নি বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘তবে আমার আত্মবিশ্বাস আর কোনো দিন এ ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। এটা একটা চিরন্তন ভাষণ হিসেবে বিশ্বের বুকে উদ্ভাসিত থাকবে। এ ভাষণ এখন আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। বাংলাদেশকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!