মার্চ ২৪, ২০২৩ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

ইউএস বাংলানিউজ, নিউইয়র্ক

অগ্রসর পাঠকের বাংলা অনলাইন

মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে উ. কোরিয়া

জাতিসংঘের আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে উত্তর কোরিয়া। এছাড়া রফতানি নিষিদ্ধ কয়লা, লোহা ও স্টিলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যও রফতানি করছে বিশ্ব থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন এই রাষ্ট্র। শুধু মিয়ানমার নয়; সিরিয়াতেও অস্ত্র রফতানি করছে দেশটি। শুক্রবার জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি উন্নয়নে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারকে সহায়তা করছে পিয়ংইয়ং। এছাড়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ করছে।

জাতিসংঘের প্রকাশিত উত্তর কোরিয়ার গোপন অস্ত্র ব্যবসাবিষয়ক ওই প্রতিবেদনের একটি কপি পেয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। এতে দেখা যায়, জাতিসংঘের প্রস্তাবনায় যেসব পণ্যসামগ্রী ও অস্ত্র রফতানি নিষিদ্ধ করেছে সংস্থাটি তার প্রায় সবগুলোর রফতানি অব্যাহত রেখেছে উত্তর কোরিয়া। এই রফতানি থেকে গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটির রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

কৌশলী বিভিন্ন উপায়, রুট ব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে চীন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও ভিয়েতনামেও কয়লা সরবরাহ করছে উত্তর কোরিয়া।

২০০৬ সাল থেকে জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় সর্বসম্মতি দেয়। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির লাগাম টানতে ও কয়লা, লোহা, সীসা, টেক্সটাইল ও সীফুডজাত দ্রব্য রফতানি নিষিদ্ধ করে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে অপরিশোধিত তেল ও পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতেও কড়াকড়ি আরোপ করে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের প্রকাশিত ২১৩ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বৈশ্বিক তেল সরবরাহ, বিদেশি নাগরিকদের ব্যবহার করে, অফশোর কোম্পানির নিবন্ধন ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করেছে উত্তর কোরিয়া।

তবে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে সংস্থাটিতে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার মিশন তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। এদিকে, চীন এবং রাশিয়া বারবার বলছে, তারা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করছে।

জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন ও সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলছে, কয়লা এবং পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সাতটি জাহাজকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্দরে নোঙ্গর করতে বাধা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রবল বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধের জন্য আরো অনেক কিছু করা প্রয়োজন বলে প্যানেলের বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।

সিরিয়া ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে। সিরিয়ার অবরুদ্ধ পূর্বাঞ্চলের ঘোওটায় নিষিদ্ধ ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগের তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান, জ্বালাও-পোড়াওয়ে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হলেও তা বরাবরই অস্বীকার করছে দেশটি। জাতিসংঘের ওই বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলছে, সিরিয়ার রাসায়নিক কর্মসূচি পরিচালনাকারী প্রধান প্রতিষ্ঠান সিরিয়া সায়েন্টিফিক স্টাডিজ রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া প্রায় ৪০টি জাহাজে করে রাসায়নিক পণ্য ও সামগ্রী পাঠিয়েছে।

সূত্র : এএফপি, রয়টার্স, আলজাজিরা।

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!