‘ভিসিরা দুর্নীতি করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে’
১ min readসম্প্রতি দেশের সরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার প্রসঙ্গ টেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘উপাচার্যগণ হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাদেরকে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আপনারা নিজেরাই যদি অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে, তা ভেবে দেখবেন।’
আজ শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন। প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর এবারই প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। প্রথম দিকের ১৯ হাজার গ্রাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন। এ উপলক্ষে ধূপখোলা মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার বর্গফুটের বিশালাকৃতির প্যান্ডেল। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের আদলে মূল মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে।
গেল ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সান্ধ্যকালীন কোর্স পরিচালনার কঠোর সমালোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধে চিঠিও পাঠায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বিষয়টি ফের তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেক সময় সান্ধ্যকালীন কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অতি ব্যস্ত সময় কাটান। এ সমস্ত কাজ কর্মে তারা খুবই আন্তরিক। যতো অনীহা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে।’
‘এই শিক্ষকরা সিলেবাস শেষ করার ব্যাপারেও খুবই সিরিয়াস’ এমন মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তারা একসাথে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা একটানা ক্লাস নেন। অনেক সময় ছুটির দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে একসাথে কয়েক ঘণ্টা ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরা কতটুকু বুঝল বা কতটুকু গ্রহণ করতে পারলো, সে ব্যাপারে তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব বা মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক্ষেত্রে কঠোর হতে বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট খরচের সিংহভাগই আসে সরকরি কোষাগার থেকে, আর কোষাগারে টাকা আসে আপামর জনগণের পকেট থেকে। তাই যে যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
শিক্ষকতাকে মর্যাদাপূর্ণ পেশা উল্লেখ করে আচার্য বলেন, ‘আপনারা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তারা অত্যন্ত মেধাবী ও বিশেষ গুণে গুণান্বিত ও দক্ষ। তাই কোন ধরনের লোভ-লালসা বা অন্য কোন মোহের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পেশার মর্যাদকে সমুন্নত রাখবেন। তাহলেই শিক্ষার্থীরা আপনাদের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করবে।’
রাষ্ট্রপতির তার ভাষণে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।