জুলাই ২৭, ২০২৪ ১১:২২ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

আজ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

১ min read

আজ আনন্দের দিন, উচ্ছ্বাসের দিন, বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ার প্রকাশ করার দিন। স্বাধীনতা দিবসের ৪৯তম দিন আজ। আজ জাতীয় দিবস। স্বাধীনতার এই দিনে বাঙালি জাতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে দেশমাতৃকার জন্য আত্মদান করা বীরসন্তানদের।

২৬ মার্চ প্রতিবছর পেছনে তাকিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়। স্বাধীকারের দাবিতে জেগে ওঠা নিরীহ বাঙালির ওপর একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চালিয়েছিল নির্মম হত্যাযজ্ঞ। সেই মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে একহয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল দেশের মানুষ।

মূলত পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে শুরু করে বাঙালিরা। সেই পটভূমিতে ৫২তে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার উন্মেষ ঘটে পূর্ববাংলায়। ধাপে ধাপে তা স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ নেয়।সামরিক শাসন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফার আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনসহ নানা ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে এগিয়ে আসে একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের আহ্বানে জেগে ওঠে নিরীহ বাঙালি। যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে তারা শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নেয়। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় চালায় বর্বর গণহত্যা। ওই রাতেই গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। তার আগেই বার্তা পাঠিয়ে দেন স্বাধীনতার ঘোষণার। এরপর গঠিত হয় প্রবাসী সরকার। তাদের নেতৃত্বে সংগঠিত রূপ নেয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদান, তিন লাখ নারীর সম্ভ্রম আর বিপুল ক্ষতির মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বিজয়। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।

দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এ দেশেরই কিছু লোক বিশ্বাসঘাতকতা করে হাত মিলিয়েছিল পাকিস্তানি ঘাতকদের সঙ্গে। তারা অংশ নেয় গণহত্যা, নারী নির্যাতন ও লুটতরাজ-অগ্নিকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে। সেই চিহ্নিত শত্রুদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রত্যয় নিয়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে স্বাধীনতা বা বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার অবশেষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে।

শুধু স্বাধীন ভূ-খন্ডই প্রত্যাশা ছিলনা মুক্তিকামী জনতার; মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল বিশাল। বাঙালি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিল। চেয়েছিল এমন একটি রাষ্ট্র, যা প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু আদর্শের ভিত্তির ওপর। স্বাধীনতা দিবস আবার এসেছে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেসব আদর্শের দিকে ফিরে তাকানোর দাবি নিয়ে।

রাষ্ট্রপ‌তি মো. আবদুল হা‌মিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা দিবস‌টি পালন উপল‌ক্ষে পৃথক বা‌ণী দি‌য়ে‌ছেন। যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ প্রত্যুষে রাজধানীতে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। এ সময় সারাদেশে একযোগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সম্ভব হলে বাংলাদেশের সঙ্গে একই সময়ে এবং অন্যান্যরা একই দিনে সুবিধাজনক সময়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন কর্মসূচি পালন করবে।

আজ সরকারি ছুটির দিন। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান উঁচু ভবনসমূহে বৃহদাকারের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে।

bangladesh

ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদকদল বাদ্য বাজাবেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণযোগাযোগ অধিদফতরের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ (অ্যাম্পিথিয়েটার) থেকে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং সদরঘাট থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত নৌপথে বিশিষ্ট শিল্পীগণের অংশগ্রহণে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।

২৬ মার্চের তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাকবিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সকল হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশুদিবা যত্ন কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সকল শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ বিকেল ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

দেশের সকল বিভাগ, জেলা ও উপজেলা সদরে সকালে কুচকাওয়াজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!