রোহিঙ্গারা বিচার চান, নিরাপদে ফিরতে চান: আন্তনিও গুতেরেস
১ min read
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে অকল্পনীয় হত্যা ও ধর্ষণের কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। ২ জুলাই, সোমবার রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পরিদর্শনের ফাঁকে এক টুইটে গুতেরেস এ কথা জানান।
টুইটার পোস্টে জাতিসংঘের মহাসচিব লিখেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে হত্যা আর ধর্ষণের যে বিবরণ তিনি শুনেছেন, তা অকল্পনীয়। তারা বিচার চান, নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে চান।’
অপর এক টুইটে তিনি লিখেন, ‘রোহিঙ্গারা বিশ্বের সবচেয়ে বৈষম্য ও ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে একটি। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট একটি মানবিক ও মানবাধিকারের দুঃস্বপ্ন। এই শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় আমি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’
জাতিসংঘের মহাসচিব জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে এসেছেন।
অপর এক টুইট বার্তায় গুতেরেস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের উদারতা ও মানবিকতার সর্বোচ্চ পরিচয় দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।’
এর আগে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান গুতেরেস ও কিম। তাদের সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি।
কক্সবাজারে নেমে প্রথমে হোটেল সাইমন বিচ রিসোর্টে যান গুতেরেস ও কিম। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে তাদের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় যান উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে যান জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। মূলত নতুন আসা রোহিঙ্গাদের ওই ক্যাম্পে রাখা হয়। সেখানে তাদের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন গুতেরেস ও কিম।
এই সফর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশের ‘উদারতা’ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ‘আরও কিছু করার’ প্রয়োজনীয়তার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, তারা বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করবেন। সেই সাথে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের প্রত্যাবাসন সম্পর্কে অগ্রগতি মূল্যায়ন করবেন।
এই সফরের আরও লক্ষ্য হচ্ছে- রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারকে মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনায় আরও সংলাপের ব্যবস্থা করতে উদ্বুদ্ধ করা এবং রোহিঙ্গাদের অবস্থার ব্যাপক সমাধানের জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করা।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকে সামনে রেখে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট কিম বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতির ব্যাপারে আমরা সকলে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
পরিস্থিতিকে ‘মানবিক ট্র্যাজেডি’ উল্লেখ করে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান বলেন, ‘এই সমস্যাটির শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’