উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য নৌকায় ভোট চাই
১ min read
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দেয়, যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেয়, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তাদের দ্বারা উন্নয়ন হবে না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই।পঁচাত্তরের পর থেকে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাংলাদেশের কোনো উন্নতি করতে পারেন নাই।
রোববার চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে বেলা ৩টার পর জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। জনসভা প্রাঙ্গণ থেকে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নতুন ভবনসহ ৪৮ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত তুলে জনসভায় আগতদের অভিবাদন জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ইলিশ আকৃতির স্মারক তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। এ সময় উপস্থিত সবাই হাত তালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে, বিদেশ থেকে টাকা দেয়া হয়েছে এতিমের জন্য। একটা টাকাও এতিমের হাতে যায় নাই। সে টাকা সব লুটপাট, চুরি করে খেয়েছে। আজকের এতিমের টাকা চুরির দায়ে সাজা ভোগ করছে খালেদা জিয়া। তার জন্য নাকি আবার আন্দোলন করে।
তিনি বলেন, কোরআন শরীফে আছে এতিমের হক কেড়ে নিও না। এতিমকে দাও। অথচ সেই অপকর্মটা করতেও তারা পিছ পা হয় নাই। তাদের লোভ এত বেশি যে লোভের মাত্রাটা ছাড়িয়ে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা নূহ নবীর কিস্তি, নৌকা মানবজাতি, পশু-পাখি সব রক্ষা করেছিল। এই নৌকা বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মী মারা গেছে, এমনকি চাঁদপুরেরও একজন মারা গেছেন। বারবার তারা আঘাত দেয়ার চেষ্টা করেছে। আল্লাহ্ অশেষ রহমতে বেঁচে গেছি। আমার লক্ষ্য একটাই এই বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, জাতির জনক যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। আজকে ৪৩ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পরে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্ব দরবারে আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। তার হত্যার পর জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-এমপি-উপদেষ্টা বানিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলো। আর ইতিহাস বিকৃতি করেছিল।
তিনি বলেন, আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের সাজা হয়েছে, তাদের গাড়িতে তুলে দিয়েছিলো আমার লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা। এর থেকে লজ্জার আর কিছু থাকতে পারে না। তবে ওদের লজ্জা-শরম একটু কম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্যই বলবো, ওরা তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশের সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এটাই তারা মেনে নিতে পারে না। আপনারাই তুলনা করে দেখেন, পঁচাত্তরের পর থেকে যারা ক্ষমতায় ছিল (জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া) তারা বাংলাদেশের কোনো উন্নতি করতে পারে নাই। আপনাদের চাঁদপুরে কি উন্নতি তারা করেছে? তাদের উন্নতি হয়েছে একটাই দুর্নীতির উন্নতি। তারা বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। বাংলাদেশের মাথা হেট করেছে বিশ্ব দরবারে। নিজেরা টাকা পাচার করেছে বিদেশে। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের টাকা ধরা পড়েছে। ঘুষ নিয়ে আমেরিকার ফেডারেল কোর্টে ধরা পড়েছে। সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে, সে টাকা ধরা পড়েছে। কিছু টাকা আমরা ফিরিয়ে এনেছি।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে একটা মেডিকেল কলেজ নির্মাণ আমরা করে দিবো। কারণ আপনাদের সংসদ সদস্য নিজেই একজন ডাক্তার। উনি দাবি করেছেন, এটা করে দেবো।
শেখ হাসিনা বলেন, এই এলাকার হাইমচরে একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা করে দেবো, যাতে লোকজনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। পর্যটনের একটা ব্যবস্থা করে দেবো কারণ এটা নৌ ভ্রমণের জন্য একটা সুন্দর জায়গা। পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থল।
তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। নৌকায় ভোট চাই, ভোট দেবেন দুই হাত তুলে ওয়াদা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই উন্নয়ন, হত্যাকাণ্ড-খুনখারাবী না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আছে বলেই সুফল দেখতে পাচ্ছেন। আমরা চাই ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত। তাহলে কি চাই? সরকারের ধারাবাহিকতা।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ।