মার্চ ২৯, ২০২৪ ১২:১৬ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

নিউ ইয়র্কে মক্কেলের খোঁজে আইনজীবিরা ছুঁটছে বিমানবন্দরে

১ min read

বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক : মক্কেলের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে আইনজীবিদের ভিড় বেড়েছে। গত শনিবার ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন থেকেই নিউ ইয়র্ক সিটির জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে যেন দপ্তর খুলে বসেছেন একদল আইনজীবী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কারণে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার মুখে বিপদে পড়ছে, তাদেরকে মক্কেল বানিয়ে উদ্ধারে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশীয় আইনজীবীরা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস।

জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের চার নম্বর টার্মিনালের এক রেস্টুরেন্টে ২০ জনের বেশি আইনজীবীর  একটি স্বেচ্ছাসেবী দল ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কারণে বিপদগ্রস্ত অভিবাসীদের সহায়তায় কাজ করে চলেছে। রেস্টুরেন্টের ভেতর টেবিল পেতে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করে চলেছে তারা। এই আইনজীবীদের সহায়তায় নেমেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আরো অনেক মানুষ। বিমান থেকে নেমেই যারা জেরার মুখে পড়ছে কিংবা গ্রেপ্তারের কবলে পড়ছে, তাদের খুঁজে বের করে তাত্ক্ষণিক আইনি সহায়তা দিচ্ছে পুরো দলটি।

গত সোমবারও ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের শিকার বেশির ভাগ মানুষকে তারা উদ্ধার করেছে। শুধু কেনেডি বিমানবন্দরেই নয়, আইনজীবীদের এ রকম দল আরো অনেক বিমানবন্দরে কাজ করছে। তবে অভিযোগ  উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই এমন আইনজীবিরারা কালো কোট টাই পড়ে মক্কেলের খোঁজে ছুঁটছে বিমানবন্দরে। গাড়ি দুর্ঘটনা সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করেন অথচ তাঁরাই এখন অভিবাসন নীতি নিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন বিপদে পড়া সাধারন মানুষদের। এ ধারনের আইনজীবিদের পরামর্শ কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা নিয়েও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চলছে নানা গুঞ্জন।

ক্যামিলি ম্যাকলার নামের এক স্বেচ্ছাসেবী আইনজীবী বলেন, ‘এটা (ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ) আমেরিকানদের কাছে এবং বিশ্ববাসীর কাছে কেবল ভুল বার্তা পাঠাচ্ছে না, আরো বেশি কিছু ঘটাচ্ছে বলে আমি মনে করি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘অনেক নেতিবাচক ঘটনার মধ্যেও আমি এসব আইনজীবী, সব স্বেচ্ছাসেবীর জন্য গর্বিত। কারণ আমরা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছি এবং সাহায্য করছি। ’ বিপদগ্রস্ত অভিবাসীদের সহায়তা করতে পেরে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিক এই মুহূর্তে আমার নিজেকে রকস্টার মনে হচ্ছে। ’

স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায় নেমেছে এমন আরো অনেক মানুষ, যাদের আইন নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। স্রেফ ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নির্বাহী আদেশের প্রতিবাদ জানাতে তারা মাঠে নেমেছে। ২৯ বছরের তরুণ জেসন স্টাম্প ম্যানহাটানে হোটেল রিসেপশনিস্টের কাজ করেন। সপ্তাহজুড়ে পরিশ্রমের পরও ছুটির দিনে তিনি চলে এসেছেন বিমানবন্দরে আইনজীবীদের সহায়তা করতে। তিনি বলেন, ‘যে আইনজীবীরা এ রকম গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেমেছেন, তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের পথ খুঁজতেই আমরা এসেছি। ’

এই প্রথম স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে নেমেছেন তরুণ আইনজীবী মার্ক হ্যানা। ব্রুকলিনের ২৯ বছরের এ তরুণ জানান, এক বন্ধুর ডাক পেয়ে তিনি জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে চলে এসেছেন। গত রবিবার ৭ নম্বর টার্মিনালে কয়েক ঘণ্টা কাজের মধ্যে তিনি যে অভিবাসীদের সহায়তা করেছেন, তাদের মধ্যে ছিল এক আলজেরীয়, যার গ্রিনকার্ড রয়েছে। মার্ক জানান, স্রেফ ওই আলজেরীয়র বাদামি চামড়ার কারণে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এমনকি তার ল্যাপটপেও আতিপাতি করে অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। অথচ ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই আলজেরিয়া। মার্ক বলেন, ‘আমি আশা করছি, তিনি (ট্রাম্প) এমন উন্মাদের মতো আর কোনো কাজ করবেন না।

গত শনিবার জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশীয় অভিবাসীদের আটকের ঘটনায় চার নম্বর টার্মিনালে দিনব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন শতাধিক বাংলাদেশি। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন ট্রাম্পের সাত মুসলিম দেশের অভিবাসীদের যাতায়াত বন্ধ করলেও সেইসব দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অগ্রাধিকার দেওয়া তাঁর সুস্থ মানষিকতা বহিঃপ্রকাশ নয়। কোন মুসলিম দেশের নাগরিকরা তাঁর এই পাগলামি মেনে নিতে পারছেন না।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
error: Content is protected !!