এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৩:০২ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

কৃষ্ণাঙ্গ যুবক হত্যা: উত্তাল আমেরিকা

১ min read
http://usbanglanews24.com/

করোনা মহামারি নিয়ে যখন হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ঠিক তখনই ঘটল অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মম ঘটনা। শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক হত্যার ঘটনায় তাই উত্তাল আমেরিকা। বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগের একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে মিনিয়াপোলিস, লস অ্যাঞ্জেলস, শিকাগো, আটলান্টা-সহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গ্রেনেড ছুড়ছে বিক্ষোভকারীদের দিকে।

পরিস্থিতি সামলাতে দেশটির বিভিন্ন শহরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। উত্তাল আন্দোলনে চাপা পড়ে গেছে করোনার ভীতি। জনতার বাঁধভাঙা জোয়ারে বিক্ষোভে উত্তাল আর রক্তাক্ত আমেরিকা। করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে এক লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুর ভয়াল স্মৃতি নিয়ে পুরো আমেরিকা আজ ভিন্ন এক বাস্তবতায়।

সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের করুণ মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছে দেশটি। লকডাউনের মধ্যেও টানা তিনদিন ধরে নিউইয়র্কে মানুষ নেমে এসেছেন রাজপথে। কেউ মাস্ক পরে এসেছেন, কেউবা হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে। পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান আর গানে উত্তাল বড় বড় নগরী। থেমে থেমে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বিক্ষুব্ধ মানুষ। নাগরিক অধিকারের সংগঠকদের সঙ্গে নিউইয়র্কে সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। নগর ও রাজ্যের নেতারা ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করছেন। বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন।

কোনোভাবেই এই ক্ষুব্ধ মানুষের দ্রোহের মিছিল থামছে না। নিউইয়র্ক নগরের ব্রুকলিনে হাজারও মানুষের উত্তাল বিক্ষোভে গাড়ি পুড়েছে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের রক্তাক্ত হতে হয়েছে। শতাধিক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। এখনো লকডাউনে থাকা এই নগরের সর্বত্র ক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। ব্রুকলিন, ম্যানহাটান থেকে কুইন্সের ডাইভার্সিটি এলাকায় বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। প্রতিবাদকারীদের থামাতে ব্রুকলিন ব্রিজের একাংশ রাত আটটার দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ম্যানহাটানের অপর দুটি সংযোগ সেতু, উইলিয়ামসবার্গ ব্রিজ এবং ম্যানহাটান ব্রিজও আংশিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) রক্তাক্ত ছবি প্রচার করেছে।

নগরের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও প্রতিবাদকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করে নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার ডারমন্ট শে বলেছেন, যখন ইট ছুঁড়ে মারা হচ্ছে, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের জর্জ ফ্লয়েড নামের ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান-আমেরিকান ব্যক্তিকে সোমবার গ্রেফতার করতে গিয়ে হত্যা করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। ফ্লয়েড একসময় বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন। তাকে হত্যার ঘটনায় চাওভিন ফেঁসে যান এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে। দেখা যায়, গলায় হাঁটু চেপে ধরায় ফ্লয়েড নিশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার চাওভিনকে বলছেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না’।

ভিডিওটি ভাইরাল হলে চাওভিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। মিনেসোটা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আমেরিকায়। আমেরিকার বেশ কিছু নগরে কারফিউ জারি করা হয়েছে বিক্ষোভ ও সহিংসতা দমনে। শনিবার ফিলাডেলফিয়ায় সহিংসতার ঘটনায় বিক্ষোভ থেকে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিংসতায় ১৩ পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন।

শনি ও রোববার রাত আটটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত নগরীতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার দিকে ডেট্রয়েটের কর্কটাউন থেকে শতশত মানুষ হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেন। টানা পাঁচ ঘণ্টা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর মিছিলটি রাত প্রায় ১০টার দিকে ডেট্রয়েট পাবলিক সেফটি হেডকোয়ার্টারের সামনে এসে পৌঁছায়। এ সময় পুলিশ সমাবেশকে বেআইনি ঘোষণা করে সবাইকে ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতে অনুরোধ জানায়। কিন্তু প্রতিবাদকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর, পানির বোতল ও আতশবাজি নিক্ষেপ শুরু করে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!