এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থগিত

১ min read

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা স্থগিতকারী দেশের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে নেদারল্যান্ডস। সতর্কতার অংশ হিসেবে এরআগে গত কয়েক দিনে এই টিকার প্রয়োগ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক, নরওয়ে, বুলগেরিয়া, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও থাইল্যান্ড। বিবিসি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ রোববার ডাচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ স্থগিত রাখবে আমস্টারডাম। টিকা স্থগিতকারী দেশগুলোর পক্ষ থেকে গ্রহণকারীর শরীরে রক্ত জমাট বাধার মতো উপসর্গের কথা বলা হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এর সঙ্গে ভ্যাকসিন নেয়ার সম্পর্ক আছে বলে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, তাদের ভ্যাকসিনের কারণে লোকজনের রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি।

এদিকে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনা টিকার প্রয়োগ বিশ্বের অনেক দেশে স্থগিত হলেও বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ বলছে, এই টিকার কার্যক্রম বাংলাদেশে অব্যাহত থাকবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্ব্য সচিব মোঃ আবদুল মান্নান বলছেন, ‘বাংলাদেশ আমরা টিকা স্থগিতের মতো কোন সিদ্ধান্ত পৌঁছেনি। যে পাঁচ-ছয়টি বা সাতটি দেশে তারা বন্ধ করেছে, তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সেটা করেছে। এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা অন্য দেশগুলো থেকে লিখিতভাবে কোন বারণ করেনি।’

তিনি আরো বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় যে উপাদানগুলো রয়েছে, রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। যেহেতু সম্পর্ক নেই, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে এই কার্যক্রম বন্ধ করতে পারি না। কারণ বাংলাদেশের মতো দেশগুলো শতভাগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মেনে চলেছে।

তিনি জানান, অক্সফোর্ডের যে টিকা আমরা নিয়ে এসেছি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বলে যে, এটা দেয়া যাবে না, এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে যদি তারা আমাদের চিঠি দেয়, তাহলে তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা অপেক্ষায় আছি।

তবে এ বিষয়ে কী বলছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা?

অ্যাস্ট্রাজেনেকার চিফ মেডিকেল অফিসার আন টেলর বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ আমাদের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা কয়েকশ-এরও কম।

কোম্পানিটি বলছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটির সুরক্ষার বিষয়টি গভীরভাবে গবেষণা করা হয়েছে। কোম্পানির একজন মুখপাত্র বলেন, রোগীর সুরক্ষাকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়। ওষুধ নিয়ন্ত্রকরা ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা মান মেনেই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পিয়ার রিভিউ করা তথ্যেও দেখা গেছে সাধারণভাবে শরীরের জন্য ভালো সহিষ্ণু।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটরি এজেন্সি বলছে, ভ্যাকসিন সমস্যা তৈরি করছে এমন কোনও প্রমাণ নেই। মানুষের উচিত ভ্যাকসিন নেয়া। সংস্থাটিতে কর্মরত ফিল ব্রায়ান বলেন, রক্তে জমাট বাঁধা স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে এবং এটি অস্বাভাবিক না। যুক্তরাজ্যজুড়ে এক কোটির বেশি মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করছে ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ)। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, ভ্যাকসিনটির কিছু ঝুঁকি থাকলেও এর সুবিধা তার চেয়েও বেশি।

বিট্রিশ গণমাধ্যম বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মিশেল রবার্টস বলেছেন, যদিও দ্রুত গতিতে গণহারে মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে, কিন্তু টিকা নিয়েও অনেক মানুষই নানা ধরণের রোগের শিকার হবেন, যার সঙ্গে এই ভ্যাকসিনের কোন সম্পর্কই নেই।

তিনি বলছেন, কিছু দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা স্থগিত করছে এ কারণে নয় যে এটি বিপজ্জনক। বরঞ্চ সেসব দেশের বিশেষজ্ঞরা দেখতে চাইছেন কেন টিকা নেওয়া কিছু মানুষের শরীরে রক্ত জমাট হলো।

মিশেল রবার্টস বলেন, টিকা নেয়ার পরপরই যদি বড় কোনো অসুস্থতা দেখা দেয়, তাহলে তা নিয়ে উদ্বেগের যথার্থ কারণ থাকতে পারে। কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!