এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ২:৩৫ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

অবশেষে ব্রেক্সিট চুক্তিতে ইউকে-ইইউ

১ min read

দীর্ঘ মতবিরোধ ও নানা টানাপড়েনের পর অবশেষে একটি চুক্তিতে পৌঁছল যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ব্রেক্সিট-পরবর্তী এ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় থাকছে মাছ শিকারের অধিকার ও ভবিষ্যৎ ব্যবসানীতি সম্পর্কিত নানা বিষয়।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শিগগিরই এ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন এবং চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো। ইইউর প্রধান উরসুলা ভন ডের লেইন এটিকে একটি ‘সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণ’ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা ব্রেক্সিট চুক্তি সম্পন্ন করেছি এবং এখন আমাদের প্রাপ্য চমত্কার সুযোগগুলোর পুরো সুবিধা আমরা নিতে পারব।

ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি বলেন, এটি একটি দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর রাস্তা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা একটি ভালো চুক্তি পেয়েছি। এটি ন্যায়সংগত ও ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি। উভয়ের পক্ষ থেকে একটি সঠিক ও দায়িত্বশীল কাজ সম্পাদিত হলো। এখন অতীত ভুলে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর সময় এসেছে। যুক্তরাজ্য আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবেই থেকে যাবে। তবে মাছ শিকার শিল্পের জন্য সাড়ে পাঁচ বছরের রূপান্তরকাল নির্ধারণ করে দিয়েছে ইইউ।

ব্রেক্সিট হলো ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ৪০ বছরের বেশি সময় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পর ২০১৬ সালের জুনে একটি গণভোটে ভোটাররা ইউইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দেন। তবে রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ ঘটে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ।

ইইউভুক্ত ২৮টি দেশ একে অন্যের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারে এবং সেখানে বসবাস বা কাজ করতে পারে। ব্রেক্সিট নিয়ে ভোটাভুটির পর বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাজ্য আর ইইউর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।

এ আলোচনার বিষয়, কী শর্তে বিচ্ছেদ হবে। এটা হচ্ছে বেরিয়ে আসার সমঝোতা, যেখানে নির্ধারণ করা হবে যে কী কী শর্তে ব্রিটেন ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে আসবে। বিচ্ছেদের বিষয়ে খসড়া চুক্তি তুলে ধরেছেন তত্কালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। চুক্তি অনুযায়ী, ইইউর দেনা চুকাতে যুক্তরাজ্য ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড দেবে।  সময়সীমা হবে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ইইউ নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক বিষয় ঠিক করে নেবে এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মানিয়ে নেবে। চুক্তির খসড়ায় আরো ছিল, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০-এর মধ্যে ইইউর নাগরিকরা এবং তাদের পরিবার মুক্তভাবে যুক্তরাজ্যে আসতে পারবেন। অন্তর্বর্তী সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হবে না।

ইইউ বা যুক্তরাজ্য, কেউ চায় না উত্তর আয়ারল্যান্ড আর রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মাঝে কোনো কড়া সীমান্ত থাকুক। তাই দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে, ব্রেক্সিট নিয়ে বোঝাপড়ায় যা-ই ঘটুক না কেন, এখানে সীমান্ত উন্মুক্ত থাকবে।

তবে, এসব শর্ত নিয়ে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বারবার উত্তপ্ত হয়েছে। ইইউর নেতাদের সমর্থন আদায়ও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ টানাপড়েনের জেরে পদত্যাগ করেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। দায়িত্ব নেন বরিস জনসন। তার নানা প্রচেষ্টার মধ্যেই হানা দেয় কভিড বৈশ্বিক মহামারী।

এরই মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্রেক্সিট চুক্তি। ফলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এ চুক্তি। অবশেষে জনসন তা করতে সক্ষম হলেন। এ চুক্তি ব্রিটিশদের জন্য বড় স্বস্তি এনে দেবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!