এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৯:৫০ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

ওমানকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

১ min read

উড়ন্ত সূচনাই করেছিল ওমান। তাতে বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কাও বাড়ছিল পাল্লা দিয়ে। তবে শেষমেশ সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক ওমানকে হারিয়েছে ২৬ রানে। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলার আশাটাও বেঁচে থাকল তাতে।

বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করে ওমান। নিজেদের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মুস্তাফিজের করা প্রথম বলটি উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে মারতে চেয়েছিলেন ওমানের ওপেনার যতিন্দর সিং, তবে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ হয়নি। উড়তে থাকা বলটি দৌড়ে এসে তালুবন্দি করার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু বলটি ফসকে হাত থেকে মাটিতে পড়ে যায়। মাথা নিচু করে লুটিয়ে পড়েন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। এটিই হতে পারতো বাংলাদেশ দলের প্রতীকী ছবি। তবে এ যাত্রায় কোনরকম প্রাণের সঞ্চার বাংলাদেশের।

কত স্বপ্ন, কত আশা আর প্রত্যাশা নিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা করেছে বাংলাদেশ দল। অথচ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে চলেছিল সব। স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ রানে হারের পর আজ (মঙ্গলবার) ওমানের বিপক্ষে হারলেই বিশ্বকাপ যাত্রা থমকে যেত টাইগারদের। সেই শঙ্কাও জেগেছিল। শেষপর্যন্ত রক্ষা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। ম্যাচে ওমানকে ২৬ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে টিকে রইলো টাইগাররা।

সুপার টুয়েলভের টিকিট পেতে বাঁচা-মরার ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে আজ জিততেই হতো বাংলাদেশ দলকে। জিতেও যে নিশ্চিত হয়েছে পরবর্তী রাউন্ড, সেটিও নয়। আশা বেঁচে থাকল মাত্র। সমীকরণ মেলাতে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৫৩ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। সে লক্ষ্য টপকাতে নেমে উড়ন্ত শুরু ওমানের। তাসকিন আহমেদের করা প্রথম ওভার থেকেই তুলে নেয় ১২ রান।

দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার আকিব ইলিয়াসকে ৬ রানে ফেরান মুস্তাফিজ। এরপর টাইগার বোলারদের উপর আরো আগ্রাসী ওমানের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মুস্তাফিজের করা প্রথম বলটি উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে মারতে চেয়েছিলেন যতিন্দর, তবে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ হয়নি। সেটি দৌড়ে এসে তালুবন্দি করার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বলটি ফসকে হাত থেকে মাটিতে পড়ে যায়।

২ বল পরেই কাশাপ প্রজাপতিকে তুলে নেন মুস্তাফিজ। ২১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন এই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের ১২তম ওভারে অধিনায়ক জিসান ১২ রান করে আউট হলে খানিক চাপে পড়ে ওমান। একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখা যতিন্দর ফেরেন এর পরেই। সাকিবের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন ৩৩ বলে ৪০ রান করে।

১৩তম ওভারে দলীয় ৯০ রানে যতিন্দর আউট হলে খেলায় ফেরে বাংলাদেশ দল। এরপর সন্দ্বীপ গৌড় ৮ বলে ৩ রান করে আউট হন সাইফউদ্দিনের বলে। ৯ রানে থাকা আয়ান খান ও ৪ রানে মোহাম্মদ নাসিমকে ফেরান সাকিব। পরপর দুই বলে দুটি ক্যাচই নেন মাহমুদউল্লাহ। ততক্ষণে ম্যাচ বাংলাদেশ দলের পকেটে। ইনিংসের ১৮তম ওভার করতে এসে কলিমউল্লাহ আর ফায়াজ খানকে আউট করেন মুস্তাফিজ।

পরে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ওমানের সংগ্রহ থামে ১২৭ রানে এতে ২৬ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মুস্তাফিজ ৪টি ও সাকিব নেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে এখনো সুপার টুয়েলভে যাওয়ার আশা বেঁচে থাকল বাংলাদশের। প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে যদি জয় পায় স্কটল্যান্ড আর বাংলাদেশ যদি হারাতে পারে পাপুয়া নিউ গিনিকে তবে কোন হিসাব-নিকেশ ছাড়াই সুপার টুয়েলভে যাবে বাংলাদেশ দল।

এর আগে টস জিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামা দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাঈম শেখের ব্যাটিংয়ের কৌশল ছিল খুবই দৃষ্টিকটু। প্রথম ২ ওভারে ৮টি বলই ডট দেন। ব্যাট হাতে তুলতে পারলেন ৬ রান। ব্যক্তিগত ৪ রানে জীবন পান লিটন, তার সহজ ক্যাচ ফেলে দেন কাশাপ। কিন্তু সাজঘরে ফেরার বোধহয় তাড়া ছিল লিটনের। পরেই বলেই আউট হলেন ৪ রান করে।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সুযোগ পাননি নাঈম। আজ ফেরেন সৌম্য সরকারের পরিবর্তে। তার ফেরা বিবর্ণ হতো, যদি না ব্যক্তিগত ১৭ ও ২৬ রানের মাথায় ওমানের ফিল্ডাররা সহজ দুটি ক্যাচ ছাড়তেন। তখনও রানের থেকে বল বেশি খেলে ফেলেছিলেন নাঈম। শেখ মেহেদীকে ৩ নম্বরে খেলায় ম্যানেজমেন্ট। আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ফায়াজ বাটকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শূন্য হাতে। দলীয় ২১ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে তুলতে পারে ২৯ রান।

সাকিব আল হাসান ৪ নম্বরে নেমে নাঈমের সঙ্গে বড় জুটি গড়েন দলকে বিপদমুক্ত করেন। দুজনেই ছুটছিলেন অর্ধশতকের দিকে। কিন্তু ৮০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে সাকিব রান আউটের শিকার হন। ফেরেন ৪২ রানের ইনিংস খেলে। ২৯ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চারের মারে। সাকিব না পারলেও ধীরগতির ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক তুলে নেন নাঈম। তার ফিফটি আসে ৪৩ বলে।

ব্যাটিং অর্ডারে এগিয়ে আসা নুরুল হাসান সোহান সুবিধা করতে পারেননি একেবারেই। জেসান মাকসুদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন ৩ রান করে। আফিফ হোসেনও ব্যর্থ এদিন। ৫ বল খেলে ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তৃতীয়বার যখন ক্যাচ তুললেন নাঈম, সেবার আর সুযোগ মেলেনি। থেমে যায় তার ৬৪ রানের ইনিংস। ৫০ বলে খেলে ৩টি চার ও ৪টি ছয় মারেন এই বাঁহাতি তরুণ।

৮ নম্বরে ব্যাট করতে নামা মুশফিকুর রহিম এ ম্যাচেও ব্যর্থ। উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন ৬ রান করে। পরের বলেই বিদায় নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। শেষদিকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১০ বলে ১৭ রানের ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষ বলে অলআউগ হওয়া টাইগারদের ইনিংস থামে ১৫৩ রানে। ওমানের হয়ে বিলাল খান ও ফাইয়াজ বাট সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!