মার্চ ২৮, ২০২৪ ৬:৫৩ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

গ্যাস্ট্রিক দূর করুন ওষুধ ছাড়াই

১ min read

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম-বেশি সবারই হয়। খাবারের বিষয়ে আমরা তো বরাবরই অসতর্ক। আবার চারপাশে এমন সব লোভনীয় খাবার থাকে যে, চাইলেও নিজেকে সংযত রাখা যায় না। ফলস্বরূপ গ্যাস্ট্রিক হয় সঙ্গী।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যারা ভোগেন তারা ভালোই জানেন বিষয়টি কতোটা অস্বিস্তিকর। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত-পার্টিতে মসলাযু্ক্ত খাবার খেলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাসের সমস্যা। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাই হাত বাড়ান ওষুধের দিকে। এতে সাময়িক কিছুটা আরাম পাওয়া যায় বটে। তবে অভ্যাসটি কিন্তু আসলেই ক্ষতিকর।

চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘন ঘন অ্যাসিড কমানোর ওষুধ খেলে তা আদতে ক্ষতিই করে। এর প্রভাবে কোনো ভারী খাবার খেলে অ্যাসিডের অভাবে প্রোটিন হজমে বিঘ্ন ঘটে৷ এছাড়া খাবার নিচে নামার প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে-পেট ভার, খাবার গলায় উঠে আসা, বমি ও বদহজমসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।

তবে সঠিকভাবে জীবন যাপন করলে গ্যাস্ট্রিক ধারে-কাছে ঘেঁষতেই পারে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো নিয়মিত খেলে ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক দূর করা যাবে-

জিরা

আমাদের প্রায় সবার রান্নাঘরেই জিরা নামক মসলাটি পাওয়া যাবে। এটি অনেক ধরনের রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। জিরা কিন্তু গ্যাস্ট্রিক সারাতেও দারুণ কার্যকরী। এটি হজম রসকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে বদহজম ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মসলাদার বা মুখরোচক খাবারের সঙ্গে অনেককেই জিরাপানি খেতে দেখবেন।

তুলসিপাতা

পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে তুলসিপাতার ব্যবহার বেশ পুরোনো। এই পাতার নির্যাস গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত ইঁদুরের গ্যাস্ট্রিক মিউকোসার প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আপনি যদি নিয়মিত তুলসি পাতা খান তবে ওষুধ ছাড়াই দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।

মৌরি

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আরেকটি কার্যকরী খাবার হলো মৌরি। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও কাজ করে। মৌরি আমাদের পাকস্থলী এবং অন্ত্রের পেশীগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে সৃষ্ট গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

ক্যামোমিল টি

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আরেকটি সহজ ও কার্যকরী খাবার হলো ক্যামোমিল টি। এই ভেষজ চা নিয়মিত খেলে ওষুধ ছাড়াই দূর হবে গ্যাস্ট্রিক। ক্যামোমিল টি গ্যাস্ট্রিকের কারণে সৃষ্ট প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি মুক্তি দেয় আলসার থেকেও। প্রতিদিন এক কাপ ক্যামোমিল টি পান করলে আপনার হজম ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে।

পুদিনা

পেট ফাঁপার সমস্যা থাকলে নিয়মিত পুদিনাপাতা খাবেন। এই ভেষজ আপনার পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। পেপারমিন্ট অয়েলে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল যৌগ, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।

শসা: শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী খাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।

দই: দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়। ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।

পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম, যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।

কলা ও কমলা: কলা ও কমলা পাকস্থলির অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও কলার সল্যুবল ফাইবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। সারাদিনে অন্তত দুটি কলা পেট পরিষ্কার রাখতে কাজ করে।

আদা: আদা সব চাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান। দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।

লবঙ্গ: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে লবঙ্গে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর গ্যাসের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তাই এবার থেকে একটু বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার পর যদি বুক জ্বালা এবং ঢেকুর ওঠার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে এক-দুটি লবঙ্গ খেয়ে ফেলতে ভুলবেন না।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরায় উপস্থিত অ্যাসিড, স্টোমাকে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

রসুন: অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ ঠিক হতে শুরু করে। ফলে গ্যাস-অম্বল সংক্রান্ত নানা লক্ষণ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।

ডাবের পানি: ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এছাড়াও গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!