প্রতিশোধ না নেওয়ার অঙ্গীকার বিএনপির ইশতেহারে
১ min readক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রতিশোধ না নেওয়ার অঙ্গীকার করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকার করেছে বিএনপি।
১৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণার আগে দলের পক্ষে এ অঙ্গীকারের কথা জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ইশতেহারে শর্তসাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।
বিএনপির ইশতেহারে বলা হয়েছে, চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সকল ধরনের তদবির ও চাঁদাবাজি নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। দেশরক্ষা, পুলিশ এবং আনসার ব্যতিত শর্তসাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা থাকবে না। সরকারের প্রথম তিন বছরে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে ২ লাখ লোককে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি। ইশতেহারে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন, বিচার বিভাগ, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ ১৯ দফার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
বিএনপির ইশতেহারে ১৯ দফার অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, অর্থনীতি, মুক্তিযোদ্ধা, যুব নারী ও শিশু, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, জ্বালানি, তথ্য ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, বৈদেশিক ও প্রবাসী কল্যাণ, কৃষি ও শিল্প, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা ও পুলিশ, আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ফান্ড প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ, পররাষ্ট্র এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
‘ভিশন ২০৩০’-এর আলোকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছে বিএনপি। ‘এগিয়ে যাবো একসাথে, ভোট দেবো ধানের শীষে’- স্লোগানকে সামনে রেখে নির্বাচন উপলক্ষে দলটির ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে। এবারের ইশতেহারে তরুণ প্রজন্মের ভোটার টানতে তাদের বিভিন্ন চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের সাম্প্রতিককালের দাবি- কোটা সংস্কার, ভ্যাটমুক্ত শিক্ষা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বিষয় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এ সময় ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি একটি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। দেশের উন্নয়নের জন্য বিএনপির কর্মসূচিগুলো বহুমুখী ও উন্নতর। বিএনপি জনগণের কাছে স্পষ্টভাবে অঙ্গীকার করতে চায়, ক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রকার প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামূলক সহমর্মী দেশ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই বিএনপির লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘আজকে এই মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে নেই। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একটি পরিত্যক্ত ভবনে নির্জন কারাবাস করছেন। তার অপরাধ, তিনি জীবনে অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে সুন্দর করবার জন্য নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মানুষের মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে গিয়ে তিনি আজ বন্দী জীবনযাপন করছেন।’
দলের মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণই দেশে ফিরতে পারছেন না। আমরা আশা করব আপনারা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকল্পে আপনাদের মূল্যবান সমর্থন প্রদান করবেন। আপনাদের একটি ভোট আমাদের নেত্রীর জীবনকে পুনরায় আলোয় উদ্ভাসিত করবে।’
ইশতেহার ঘোষণাকালে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।