২১টি বিশেষ অঙ্গীকারসহ ইশতেহার ঘোষণা আওয়ামী লীগের
১ min readইশতেহার প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ২১টি বিশেষ অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবে দলটি।
১৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।
ইশতেহার ঘোষণাকালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কাজ করতে গিয়ে আমার বা আমার সহকর্মীদেরও ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। আমি নিজে এবং দলের পক্ষ থেকে আমাদের যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে সেগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরো সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাঙ্খিত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, নিরক্ষরতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ।’
এবারের ইশতেহারে ২১টি ‘বিশেষ’ অঙ্গীকার নিয়ে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ শিরোনামে গ্রামভিত্তিক উন্নয়ন তথা গ্রামে আধুনিক সুবিধার উপস্থিতি, শিল্প উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সুরক্ষা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য খাতে রয়েছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। এ ছাড়া বাংলাদেশকে আধুনিক, উন্নত ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা থাকছে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে। এই ইশতেহারের নাম দেয়া হয়েছে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ।’
ইশতেহারে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন মেয়াদে সরকারে থাকার সময়কার অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়। এর পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের সময়কার নানা নেতিবাচক দিকও তুলে ধরা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এ দেশের সাধারণ মানুষ যাতে ভালভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়, তাদের জীবন সমৃদ্ধশালী হয়, ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং বঞ্চনা থেকে তারা যেন মুক্তি পায়, তাদের জীবনটাকে আরো উন্নত করা, এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র কামনা।’
যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা সাড়ম্বরে পালন করব।’
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই পারবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে, পারবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে আমার আকুল আবেদন আগামী ৩০ তারিখে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করুন। আপনারা নৌকায় ভেটি দিন। আমরা আপনাদেরকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করে দেবো।’
সুশীল সমাজ, প্রকৌশলী, বুদ্ধিজীবী, তরুণ সমাজের প্রতিনিধি, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকসহ প্রায় এক হাজার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা ইশতেহার ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকার হলো
১. আমার গ্রাম, আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ
২. তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করা এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা
৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ
৪. নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ
৫. পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা
৬. সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল
৭. মেগা প্রজেক্টগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন
৮. গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা
৯. দারিদ্র্য নির্মূল
১০ সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি
১১. সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি
১২. সকলের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা
১৩. সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার
১৪. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
১৫. আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা—লক্ষ্য যান্ত্রিকীকরণ
১৬. দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন
১৭. জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা
১৮. ব্লু-ইকোনোমি—সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন
১৯. নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা
২০ . প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অটিজম কল্যাণ
২১. টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ