এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ৮:০২ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

বাংলাদেশে শিগগিরই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

১ min read

ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের (ই-পাসপোর্ট) জন্য ফি নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ই-পাসপোর্টের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনও কাগজপত্র সত্যায়ন করতে হবে না। এমনকি ছবি সংযোজন ও তা সত্যায়ন করার দরকার নেই। ই-পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ কাল, বিতরণের ধরন অনুসারে ভ্যাট ছাড়া সর্বনিম্ন ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও বর্তমানে পাসপোর্টের জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৩ হাজার ৪৫০ ও অতি জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৬ হাজার ৯০০ টাকা। এদিকে, ই-পাসপোর্ট চালুর সব কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে।  সময় নির্ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেলে শিগগিরই আয়োজন করা হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ আজহারুল হক বলেন, ‘ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। ই-পাসপোর্ট সেবা চালুর কাজও শেষ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তিনি দেশে ফিরলেই ই-পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ হবে।’

মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও ফি

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ গত ১ আগস্ট ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের (ই-পাসপোর্ট) ফি নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করেছে।পরিপত্রের তথ্য মতে, ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে দুই ধরনের, ৫ ও ১০ বছর। পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যাও হবে দুই ধরনের, ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠা। পাসপোর্ট বিতরণের পদ্ধতি তিন ধরনের— সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরি।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে ও অন্যান্য সব তথ্য সঠিক থাকলে, পাসপোর্ট পাওয়া যাবে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে। জরুরিভাবে পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। অতি জরুরি পাসপোর্ট ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৩৫০০ টাকা। আর ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ৫ হাজার টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৫৫০০ টাকা। আর ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে সাত হাজার টাকা।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৫৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ৭ হাজার টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৭৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ৯ হাজার টাকা।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট অতি জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ৯ হাজার টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট অতি জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ১২ হাজার টাকা।

বিদেশে অবস্থারত বাংলাদেশিদের জন্য
অন্যদিকে, বিদেশে অবস্থারত বাংলাদেশিদের জন্য পৃথক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে  বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের  ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৩০ মার্কিন ডলার। আর ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ৫০ মার্কিন ডলার। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ১৫০ মার্কিন ডলার। আর ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ১৭৫ মার্কিন ডলার। ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ৪৫ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি  হলে ফি দিতে হবে ৭৫ মার্কিন ডলার। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি  পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ২০০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ২২৫ মার্কিন ডলার।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য পৃথক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। দূতাবাসের মাধ্যমে ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি  পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ১০০ মার্কিন ডলার। আর ১০ বছর মেয়াদি  হলে ফি দিতে হবে ১২৫ মার্কিন ডলার। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি  পাসপোর্ট সাধারণভাবে পেতে ফি দিতে হবে ১৫০ মার্কিন ডলার। আর ১০ বছর মেয়াদি  হলে ফি দিতে হবে ১৭৫ মার্কিন ডলার।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি  পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ১৫০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি  হলে ফি দিতে হবে ১৭৫ মার্কিন ডলার। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট জরুরিভাবে পেতে ফি দিতে হবে ২০০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি হলে ফি দিতে হবে ২২৫ মার্কিন ডলার।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট বিধিমালা অনুসারে এই ফি’র সঙ্গে নির্ধারিত হারে ভ্যাটসহ অন্যান্য চার্জ যুক্ত হবে। বিদেশে আবদনকারীদের ক্ষেত্রে সারচার্জ যুক্ত হবে।

অনলাইনে পূরণ করা যাবে

ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোনও কাগজপত্র সত্যায়ন করতে  হবে না। আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে, অথবা পিডিএফ ফরম্যাট ডাউনলোড করে কম্পিউটারে ফরমটি পূরণ করা যাবে। কোনও ছবি সংযোজন করা এবং তা সত্যায়ন করার দরকার নেই। অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারীর ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে। ১৮ বছর হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া যাবে। তবে ১৮ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক।

১৮ বছরের নিচে হলে

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের নিচে সব আবেদনকারীর ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ বছর। বৈদেশিক মিশন থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানায় জায়গায় বাংলাদেশে যোগাযোগের ঠিকানা দিতে হবে। কূটনৈতিক পাসপার্টের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনসুলার অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার উইং অথবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের (ডিআইপি) প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদন জমা দিতে হবে। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও তাদের নির্ভরশীল স্ত্রী, স্বামী এবং সরকারি চাকরিজীবীদের ১৫ বছরের কম বয়সের সন্তানের ক্ষেত্রে  সাধারণ আবেদনের ফি দিয়ে অতি জরুরি সুবিধায় পাসপোর্ট পাওয়া যাবে।

নবায়ন

ই-পাসপোর্ট নবায়ন প্রসঙ্গে পরিপত্রে বলা হয়, মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে কোনও অতিরিক্ত তথ্য সংযোজন বা ছবি পরিবর্তনের প্রয়োজন না হলে আবেদনকারীকে উপস্থিত থাকতে হবে না। যদি সংশোধনের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিস বা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে হবে। বাংলাদেশে অতি জরুরি পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। জরুরি পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। সাধারণ আবেদনে নবায়ন করা  হবে সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে।কোনও ব্যক্তি মারা গেলে তার পাসপোর্ট বাতিলের জন্য নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস বা বাংলাদেশ মিশনে জমা দিতে হবে। বাতিল করা পাসপোর্ট আবেদনের ভিত্তিতে মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!