শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় মিজু আহমেদকে বিদায়
১ min read
চলচ্চিত্রের খলঅভিনেতা সদ্যপ্রয়াত মিজু আহমেদকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে চলচ্চিত্র পরিবার। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় এফডিসিতে চলচ্চিত্রশিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকসহ সবার উপস্থিতিতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। জানাজা শেষে সমাহিত করার জন্য তার মরদেহ কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মিজু আহমেদের মরদেহ এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব ভবন প্রাঙ্গণে রাখা হয় সকাল ১০টায়। চলচ্চিত্রের মানুষরা তাকে এক নজর দেখতে ও শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন সেখানে। শ্রদ্ধা জানিয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতিসহ চলচ্চিত্রের অন্যান্য সংগঠন।
এ সময় চলচ্চিত্রে মিজু আহমেদের সহকর্মী, বন্ধু আর ভক্তদের উপস্থিতিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। মিজু আহমেদের জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন আয়োজনে অংশ নেন অভিনেতাদের মধ্যে সৈয়দ হাসান ইমাম, আহমেদ শরীফ, টেলি সামাদ, জাভেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, ওমর সানি, অমিত হাসান, আমিন খান, ড্যানি সিডাক, জায়েদ খান, সায়মন প্রমুখ।
নির্মাতা ও প্রযোজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ নজরুল, মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ডসহ অনেকে। শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। পাশে আমিন খান। মিজু আহমেদ যার হাত ধরে চলচ্চিত্রে এসেছিলেন সেই পরিচালক শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার হাত ধরে মিজু আহমেদ চলচ্চিত্রে এসেছিল। সব সময় তাকে নিয়ে অহঙ্কার করতাম। আমি তার জানাজা পড়ছি আজকে। সত্যিই অনেক কষ্ট হচ্ছে।’ মিজু আহমেদের ছোট ছেলে আশরাফুল আহমেদ জানান, ‘বাবাকে কুষ্টিয়ায় দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হবে। সবাই বাবার জন্য দোয়া করবেন।’
ওমর সানি বলেন, ‘মিজু ভাইয়ের মৃত্যু চলচ্চিত্রের জন্য বিরাট ক্ষতি। মেনে নেয়ার মতো নয়। সবাইকেই চলে যেতে হবে। তার জন্য দোয়া করবেন।’ তিনি জানান, আগামী শনিবার বাদ আসর মিজু আহমেদের জন্য চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার (২৭ মার্চ) কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাওয়ার সময় তিনি হƒদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে নামিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
কুষ্টিয়ায় ১৯৫৩ সালের ১৭ নভেম্বর জন্মে ছিলেন মিজু আহমেদ। তার প্রকৃত নাম মিজানুর রহমান। শৈশব থেকে থিয়েটারের প্রতি আগ্রহী ছিলেন তিনি। তাই কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি নাট্যদলে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ ছবির মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মিজু আহমেদ। কয়েক বছরের মধ্যে ঢালিউডে খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান তিনি। অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি। মিজু আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি হলোÑ মহানগর (১৯৮১), স্যারেন্ডার (১৯৮৭), চাকর (১৯৯২), সোলেমান ডাঙ্গা (১৯৯২), ত্যাগ (১৯৯৩), বশিরা (১৯৯৬), আজকের সন্ত্রাসী (১৯৯৬), হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), কুলি (১৯৯৭), লাঠি (১৯৯৯), লাল বাদশা (১৯৯৯), গুণ্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ঝড় (২০০০), কষ্ট (২০০০), ওদের ধর (২০০২), ইতিহাস (২০০২), ভাইয়া (২০০২) ইত্যাদি।