এপ্রিল ১৭, ২০২৪ ৩:২৯ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ইজতেমার প্রথম পর্ব

১ min read

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের আয়োজনে ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।

মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।

সকালে দিক-নির্দেশনামূলক বয়ানের পর লাখ লাখ মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে। জনসমুদ্রে হঠাৎ নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। কান্নায় বুক ভাসান তারা। ২৪ মিনিটব্যাপী মোনাজাতে মাওলানা জোবায়ের প্রথম ১৩ মিনিট মূলত পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন। শেষ ১১ মিনিট দোয়া করেন বাংলা ভাষায়। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। অনেকে বিমানবন্দর গোল চত্বর কিংবা উত্তরা থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছু বন্ধ রাখা হয়। মোনাজাত শেষে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠ ত্যাগ করবেন। মাঠ বুঝিয়ে দেয়া হবে প্রশাসনের কাছে। পরে প্রশাসন মাওলানা সাদ অনুসারীদের কাছে ময়দান বুঝিয়ে দেবেন। আগামীকাল রোববার বাদ ফজর থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীদের পরিচালনায় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। সোমবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার সকালে চার দিক থেকে লাখ লাখ মুসল্লি পায়ে হেঁটেই টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাস্থলে পৌঁছেন। সকাল ৯টার আগেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মুসল্লিরা মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলি-গলি, বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। ইজতেমাস্থলে পৌঁছাতে না পেরে কয়েক লাখ মানুষ কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন।

মাওলানা জোবায়ের মোনাজাতে বলেন, হে আল্লাহ আমাদের ইমানকে আরো মজবুত করে দেন। হে আল্লাহ আমাদের আপনার বান্দা হিসেবে কবুল করে নেন। জিন্দেগিতে আমাদের যতো পাপ আছে তার সব মাফ করে দেন। সারা বিশ্বের মুসলমানদের আপনি শান্তি কবুল করে দেন। জিন্দেগি থেকে নফরমানি দূর করে দেন।

মোনাজাতে আরও বলা হয়, হে আল্লাহ তুমি তো ক্ষমাশীল, তোমার কাছেই তো আমরা ক্ষমা চাইব। দ্বীনের ওপর আমাদের চলা সহজ করে দাও। হে আল্লাহ, তুমি আমাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাও। আমরা যেন তোমার সন্তুষ্টি মাফিক চলতে পারি সে তওফিক দাও। দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে আমাদের হেফাজত করো। নবীওয়ালা জিন্দেগি আমাদের নসিব করো।

southeast

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদফতর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড থেকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের অলি-গলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগ দেয়া হয়।

ইজতেমায় নারীদের অংশ নেয়ার কোনো বিধান না থাকলেও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী কয়েক হাজার নারী আগের দিন রাত থেকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশে, বিভিন্ন মিলকারখানা, বাসা-বাড়িতে ও বিভিন্ন দালানের ছাদে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। আখেরি মোনাজাতের ফজিলত লাভের আশায় তারা মোনাজাতে শরিক হতেই ময়দানের আশপাশের এলাকায় পর্দার সঙ্গে অবস্থান নেন।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read
error: Content is protected !!