‘নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়’
১ min readনারীর ওপর সহিংসতা রোধসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নারীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতির মাধ্যমে জীবন-জীবিকার সকল ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির জন্য জাতিসংঘের এক আলোচনায় তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সদর দফতরে সম্মেলন কক্ষে ‘নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ বিষয়ক উচ্চপদস্থ আলোচনায় এ প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী। লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট ও নারী নেত্রী পরিষদের চেয়ার ডালিয়া গ্রিবাউসকাইটের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি যে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনীতির উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবৃদ্ধি হয়। উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের মধ্য দিয়ে বৃহত্তর লিঙ্গ সমতা প্রতিফলিত হয়।’
এ ছাড়া একই কাজের জন্য নারীরা পুরুষদের চেয়ে ১০-৩০ শতাংশ কম মজুরি পায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় ৭৫ শতাংশ পুরুষের তুলনায় সারাবিশ্বে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ চাকরি করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শ্রম বাজারে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা গেলে ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে জিডিপিতে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ যোগ হতে পারে।’
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি ও নীতিমালার ওপর জোর দিয়েছে, বিশেষ করে নারীদের জন্য, যাতে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ওপর শুধু প্রভাব ফেলবে না, বরং সমাজে নারীর অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করবে।’
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ব্যবসা এবং নীতিনির্ধারণের মতো ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসের বিষয়ে আলোকপাত করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংসদে ৭২ জন সদস্য নারী। স্পিকার, সংসদ নেতা ও সংসদ উপনেতা ও বিরোধীদলীয় নেতা–সবাই নারী। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৮-এর রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশ এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লিঙ্গ সমতাভিত্তিক দেশ। বাংলাদেশে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীরা বিনামূল্যে শিক্ষা গ্রহণ করছে। বর্তমানে কৃষি, সেবা ও শিল্প খাতগুলোকে ২০ মিলিয়ন নারী কাজ করছে। বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছে নারীরা। বাংলাদেশি নারীরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ইতিহাস সৃষ্টি করছে।’ –
(ইউএনবি)