মার্চ ২১, ২০২৩ ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

ইউএস বাংলানিউজ, নিউইয়র্ক

অগ্রসর পাঠকের বাংলা অনলাইন

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই ‘

লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের দেশে যা কিছু গৌরবের আগামী প্রজন্মের জন্য তা সংরক্ষণ করতে হবে। এসব গৌরব ও সংস্কৃতি আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না। এ অর্জন যেন কোনোভাবেই নস্যাৎ না হয় সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা সব সময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চলতি বছরের একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি পরিবেশন করা হয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ জাতীয় সঙ্গীত ও একুশের গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা এখনও সক্রিয় বলেই দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর বারবার আঘাত আসে। পাকিস্তানের কিছু পেতাত্মা এদেশে এখনও রয়ে গেছে। যার কারণে আমাদের ভাষা ও উন্নয়নের প্রতি আঘাত আসে, বাধা আসে। তারপরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আর আমাদের কেউ অবহেলা করতে পারে না। নিজেদের প্রচেষ্টায় আমরা বিশ্বে একটা মর্যাদা পাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও কলাকুশলীদের খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে। এতে ভবিষৎ প্রজন্মও উৎসাহিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলায় প্রথম ভাষণ দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতিবছর জাতিসংঘের অধিবেশনে যতবার গিয়েছি আমিও বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই। দেশকে এগিয়ে নিতে এবং বিশ্বের দরবারে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সবার সহযোগিতা দরকার। এছাড়া আগামী প্রজন্মের কাছে দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইতিহাসও বিকৃতি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে যে মর্যাদা পাওয়ার কথা ছিল তা হারাতে বসেছিলাম। কারণ, ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা করা হয়। অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেন নিজেদের ভাষা ও ঐতিহ্যকে ভুলে না যাই। তবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।

তিনি বলেন, আমাদের গর্ব করার মতো অনেক কিছুই আছে। আমাদের ঐতিহ্য জামদানি, মঙ্গল শোভাযাত্রা, সিলেটের শীতল পাটি ও নকশি কাঁথা। এগুলোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন, যা বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যে জর্জরিত ছিল তা থেকে আমরা অনেকটা মুক্তি পেয়েছি। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে থাকতে চাই। সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। বাংলা নববর্ষ পালনের স্বীকৃতি কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে হয়েছিল, আমাদের প্রতিটি অর্জনই ত্যাগ স্বীকার করে অর্জন করতে হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আসাদুজ্জামান নূর। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সফিউল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ইব্রাহিম হোসেন খান।

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!