মার্চ ২৯, ২০২৪ ৮:৪৬ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

যুবক-ডেসটিনির গ্রাহকরা ৬০% টাকা ফেরত পেতে পারেন

১ min read

যুবক ও ডেসটিনির যে পরিমাণ সম্পদ আছে তা বিক্রি করলে গ্রাহকদের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেছেন, যুবক ও ডেসটিনির কথা শুনেছি। বাণিজ্যমন্ত্রণালয় যদি প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে, তাহলে গ্রাহকদের ৫০ থেকে ৬০ ভাগ টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু সেটা আমি চাইলে তো হবে না, আইনমন্ত্রীর সহযোগিতা লাগবে। মন্ত্রীকে বলেছি, তিনি বলেছেন, এটি আদালতের ব্যাপার। আইনের ঝামেলা মেটাতে আদালতের রায় পেতে হবে।

রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে ‘প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যরা অংশ নেন। এতে ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম ও কমিশনের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচারমাধ্যম তথা সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাণিজ্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। গুটিকয়েক অসৎ প্রতিষ্ঠানের কারণে ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, করোনাকালে ই-কমার্স ভোক্তাদের সেবায় কাজ করে সুনাম অর্জন করেছে। বিগত দুটি ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সরকার যথাযথ আইন প্রণয়ন করে সুশৃঙ্খলভাবে ই-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য কাজ করছে। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে পণ্য দেওয়ার অফার বাস্তবসম্মত নয়, এটি বুঝতে হবে। সাধারণ মানুষকে এ ধরনের প্রলোভন দেখানো থেকে সরে আসতে হবে।

ই-কমার্স সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাংবাদিকরা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মানুষকে প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। ই-কমার্স বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে। ইতোপূর্বে যেসব প্রতিষ্ঠান মানুষকে প্রতারিত করেছে, সেগুলোর অনেক সম্পদ আছে। সম্পদগুলো বিক্রয় করলে অনেকের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব। এসব বিষয় মাথায় রেখে সরকার কাজ করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি নতুন প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে এটি কাজ করে যাচ্ছে। এটি নির্দিষ্ট আইনের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এ কমিশনের জনবল এবং সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। এ কমিশনকে শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করছে। এ কমিশন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্বপ্রণোদিতভাবে অনেক বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন শক্তিশালী হবে।

ই-কমার্স সাইটে অর্ডার দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই

মন্ত্রী বলেন, আমি গত কোরবানির ঈদের আগের কোরবানির ঈদে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করি। তাদের কাছ থেকে নিজের কুরবানির গরু কিনতে এক লাখ টাকা দিই। কিন্তু আমাকে যে গরুটি দেখিয়েছিল, আমি সেটি পাইনি। আমি নিজেই তখন অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছিলাম। একটি জিনিস নতুন করে চালু করলে সেটা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়, তার ভুক্তভোগী আমি নিজেই। প্রতিষ্ঠানটি আমার পরিচিত ছিল। যেহেতু আমাকে অন্য গরু দেবে বলেছে, তাই মামলা করিনি। পরে এক লাখ টাকায় আমাকে গরুর সঙ্গে একটি ছাগলও দিয়েছে। যদি আমি শুনতাম টাকাও নেই, গরুও নেই তাহলে মামলা করা যেত।

এ সময় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি সম্পর্কে টিপু মুনশি বলেন, ব্যবসায়ীদের চেয়ে মানুষের প্রতি আমার টান অনেক বেশি। লাখ লাখ কোম্পানির মতোই ইভ্যালি যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক (আরজেএসসি) থেকে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করছে। ইভ্যালি প্রচার-প্রোপাগান্ডায় কী পরিমাণ খরচ করেছে, আপনারা তা দেখেছেন। তাদের প্রচারণার ব্যয় দেখেই বোঝা যায় তারা কী করতে চেয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা শুনে আরও অবাক হবেন ই-অরেঞ্জ তো নিবন্ধনও নেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা করেছে কেবল ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে। এর বিরুদ্ধে বর্তমান আইনের ৪২০ ধারায় মামলা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাতে কী লাভ হবে? কয়েকদিন পরে তারা জামিন নিয়ে চলে যাবে। তাই আইন পরিবর্তন করতে হবে।

ই-কমার্সের সমস্যা সমাধানে সবাই মিলে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আইনি প্রক্রিয়া আরও কঠোর করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি আইন পরিবর্তন করে ই-কমার্স খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার। এই তিন-চার কিংবা ১৫ থেকে ২০টি কোম্পানির জন্য ই-কমার্স খাতকে বিপদে ফেলতে চাই না। এ জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মফিজুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। মামলাটি আদালতে চলমান আছে। শিগগিরই রায় হবে।

বাংলাদেশে সম্প্রতি একাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জ। বিভিন্ন ধরনের অফার এবং দ্রুত সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করেছিল।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!