এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৭:৪৪ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

বৃষ্টির পানিতে ভাসছে চট্টগ্রাম

১ min read

গত কয়েকদিন ধরেই তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে চট্টগ্রামে। কখনো থেমে থেমে, কখনো মাঝারি এবং কখনো ভারী বর্ষণ হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে নগরীর বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে নগরবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বৃষ্টির পানিতে কোথাও কোমর ও কোথাও হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও নগরীর বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে গত দুইদিনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত ১০৫ পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত দু’দিনে চট্টগ্রামে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৪ মিলিমিটার। আর বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬ মিলিমিটারে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, এখন যেমন থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছে, কালও তেমন বৃষ্টি পড়বে। তাছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। এর ফলে পাহাড় ধস হতে পারে। এছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত এবং নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। নগরীর চকবাজার, কাপাসগোলা, রাহাত্তারপুল, চাদগাঁও, বাকলিয়া, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, আগ্রাবাদের সিডিএ আবাসিক এলাকা, মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল এবং হালিশহরের নিচু এলাকায় রাস্তায় পানি জমে যায়।

চাদগাঁও এলাকার একজন বাসিন্দা জানালেন, অল্প বৃষ্টিপাতেই এখানে পানি জমে যায়। এখনতো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে, তাই পানি হবেই। তাছাড়া পাশের খালে সিডিএর বাঁধ থাকায় আরও সমস্যা হচ্ছে।

জোয়ার আর বৃষ্টিতে ডুবে আছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক নুরুল হক বলেন, এই জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। জলাবদ্ধতা থেকে হাসপাতালকে রক্ষা করতে হাসপাতালের নিচতলা প্রায় আড়াই ফুট পর্যন্ত উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও মুক্তি মিলছে না।

বর্তমানে আরও উঁচু জায়গায় হাসপাতালের ১৪ তলাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। এই ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে মা ও শিশু হাসপাতালের জলাবদ্ধতা থেকে স্থায়ী সমাধান মিলবে।

ভারি বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। নগরের বায়েজিদ লিংক রোডের ৫ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশে এবং ব্রিজ সংলগ্ন ফুটপাতসহ কিছু অংশে দেবে গেছে। ব্রিজের নিচের অংশেও দেখা গেছে ব্যাপক ধস নামার চিহ্ন। আশপাশে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল।

নগরীর খুলশী থানার বায়তুল আমান আবাসিক এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাহাড়ের নিচে থাকা দুইটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, বিভিন্ন পাহাড় থেকে ১০৫টি পরিবারকে সরিয়ে চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাদের আল হেরা মাদ্রাসা, রউফাবাদ রশিদিয়া মাদ্রাসা, ফিরোজ শাহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লালখান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

এখানে আসা পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্যসহায়তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার মতিঝর্ণা, ফিরোজশাহ ও আকবরশাহ এলাকার পাহাড় থেকে ২৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পাহাড় ধসের বিষয়ে তিনি বলেন, বিকেল ৪টার দিকে নগরীর গরীবউল্লাহ শাহ মাজার এলাকায় আমান উল্লাহ হাউজিংয়ে পাহাড় ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম সেখানে যায়। এর আগে সকালে আমবাগান এতিমখানা পাহাড় এবং বায়েজিদ লিঙ্ক রোডেও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। আমান উল্লাহ হাউজিংয়ে যেখানে পাহাড় ধসে পড়েছে, সেখানে কোনো ঘর ছিল না। অদূরে একটি ঘর ছিল। সেখানে মাটি আসেনি।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!