এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ২:৩২ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

এবার চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগী শনাক্ত

১ min read

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বা মিউকরমাইকোসিস (কালো ছত্রাক) আক্রান্ত এক নারী শনাক্ত হয়েছেন।

বুধবার (২৮ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৫০ বছরের বেশি বয়সের এ রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে আজকেই আমরা নিশ্চিত হই তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, আমাদের চিকিৎসকদের অধীনে চিকিৎসা চলছে। আগামীকাল পর্যন্ত দেখব। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হবে কি না।

হাসপাতাল সূত্রে রোগীর বাড়ি পটিয়া উপজেলায় বলে জানা গেছে। চলতি মাসের ৩ তারিখে করোনায় আক্রন্ত হন পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই নারী। তবে ১৫ জুলাই তার করোনা নেগেটিভ আসে। এরপরও তার নানা শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। পরে চারদিন আগে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ৮ মে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেকজনের শরীরেও ছত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়। এরপর ২২ মে একজন মারা যান। এটাই দেশে এই ছত্রাকের কারণে প্রথম মৃত্যু।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী?

মাইকরমাইসিটিস গোত্রের কয়েকটি ছত্রাক প্রজাতি থেকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। শরীর দুর্বল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এই ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। এর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন কারণে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটতে পারে।

কিন্তু নতুন করে যে চিন্তা দেখা দিয়েছে, সেটি হল— করোনা রোগীদের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ প্রবল হয়ে উঠছে। বিশেষত যে রোগীদের স্টেরয়েড দিতে হচ্ছে বা যারা আগে থেকেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছেন।

এছাড়া যে রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি ও স্টেরয়েড থেরাপি নিয়েছেন তাদেরও মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ ঘটছে।

দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এইমস) পরিচালক ড. রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হলে প্রাথমিকভাবে তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে— ১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ২. রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা ৩. স্টেরয়েড বা কর্টিকোস্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের সঠিক ব্যবহার।

ভারতের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার পর দ্বিতীয় সংক্রমণ হিসেবে মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাকে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশের মৃ্ত্যু হয়েছে। এছাড়া, করোনা রোগীদের চিকিৎসার সময়ে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার রোগীদের শরীরে ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স’ বা ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু তৈরি করছে। যা পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয়বার ইনফেকশনের জন্য দায়ী।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, আরও স্পষ্ট করে বললে হাসপাতালে যাদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে, কিংবা স্টেরয়েডের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হচ্ছে, তারা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। আবার ছত্রাকে সংক্রমণের পর ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হলে সংক্রমিতদের বড় অংশের মৃত্যু হচ্ছে।

ফাঙ্গাস সংক্রমণের উপসর্গ

কিছু কিছু ফাঙ্গাস থেকে সংক্রমণের উপসর্গগুলোর সঙ্গে কোভিড-১৯ রোগীর লক্ষণগুলোর মিল রয়েছে। যেমন জ্বর, কাশি এবং নিঃশ্বাস নিতে না পারা।

ক্যানডিডা ফাঙ্গাসের বাড়তি উপসর্গের মধ্যে রয়েছে সাদা রঙের র‍্যাশ বা ক্ষত- যে কারণে একে অনেক সময় বলা হয় ‘সাদা ফাঙ্গাস’। নাক, মুখ, ফুসফুস, পাকস্থলি বা নখের গোড়ায় এই ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা যেতে পারে, যে র‍্যাশ অনেক সময় সাদা ছানার মতো দেখায়।

এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শরীরে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে অর্থাৎ তা রক্তে চলে গেলে প্রায়ই রক্ত চাপ কমে যাওয়া, জ্বর, পেটে ব্যথা এবং মূত্রনালীর প্রদাহের মত উপসর্গ দেখা যায়।

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!